পদ কাকে বলে? পদ কয় প্রকার ও কি কি উদাহরণ? পদের শ্রেনীবিভাগ

আজকের এই পোস্ট হতে আপনি জানতে পারবেন যে পদ কাকে বলে? পদ কয় প্রকার ও কি কি উদাহরণ। প্রশ্নটি বাংলা দ্বিতীয় পত্র বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে নিচে এ বিষয়টি সম্পর্কে বিস্তার ভাবে আলোচনা করা হলো।

পদ কাকে বলে?

বাক্যে ব্যবহৃত প্রত্যেকটি শব্দকে পদ বলা হয়। পদ হল বাক্যের মূল উপাদান। পদ বাক্যের অর্থ প্রকাশে সাহায্য করে।

পদ কয় প্রকার ও কি কি উদাহরণ

পদ প্রধানত দুই প্রকার:

  • বিশেষ্য পদ
  • ক্রিয়া পদ

বিশেষ্য পদ

যে পদ কোনো ব্যক্তি, বস্তু, স্থান, গুণ, অবস্থা, সংখ্যা, পরিমাণ, সময় ইত্যাদিকে নির্দেশ করে তাকে বিশেষ্য পদ বলে।

বিশেষ্য পদের উদাহরণ:

  • ব্যক্তি: মানুষ, ছেলে, মেয়ে, বাবা, মা, ভাই, বোন, ইত্যাদি
  • বস্তু: ঘর, দরজা, জানালা, কলম, বই, খাতা, ইত্যাদি
  • স্থান: গ্রাম, শহর, দেশ, মহাদেশ, ইত্যাদি
  • গুণ: ভালো, মন্দ, সুন্দর, কুৎসিত, ইত্যাদি
  • অবস্থা: বসে, দাঁড়িয়ে, শুয়ে, হেঁটে, ইত্যাদি
  • সংখ্যা: এক, দু’এক, তিন, চার, ইত্যাদি
  • পরিমাণ: অনেক, কিছু, সামান্য, ইত্যাদি
  • সময়: সকাল, দুপুর, সন্ধ্যা, রাত, ইত্যাদি

ক্রিয়া পদ

যে পদ কোনো কাজ, ক্রিয়া, অবস্থা বা দশা প্রকাশ করে তাকে ক্রিয়া পদ বলে।

ক্রিয়া পদের উদাহরণ:

  • কাজ: খেলা, পড়া, লেখা, খাওয়া, ইত্যাদি
  • ক্রিয়া: যাওয়া, আসা, হওয়া, থাকা, ইত্যাদি
  • অবস্থা: বসে থাকা, দাঁড়িয়ে থাকা, শুয়ে থাকা, ইত্যাদি
  • দশা: ঘুমানো, হাঁটা, দৌড়ানো, ইত্যাদি

পদসমূহের শ্রেণীবিভাগ

পদসমূহকে তাদের অর্থ, কাজ, গঠন প্রভৃতি বিবেচনায় বিভিন্ন শ্রেণীতে ভাগ করা হয়।

বিশেষ্য পদসমূহের শ্রেণীবিভাগ:

  • প্রকৃতিগত বিশেষ্য: প্রকৃতিতে বিদ্যমান বস্তু, প্রাণী, গুণ, অবস্থা, সংখ্যা, পরিমাণ ইত্যাদিকে নির্দেশ করে এমন বিশেষ্যকে প্রকৃতিগত বিশেষ্য বলে।
  • নির্মাণাত্মক বিশেষ্য: বিদ্যমান বস্তু, প্রাণী, গুণ, অবস্থা, সংখ্যা, পরিমাণ ইত্যাদির উপর কোনো ক্রিয়া বা অন্য কোনো শব্দের প্রভাবে যে বিশেষ্য গঠিত হয় তাকে নির্মাণাত্মক বিশেষ্য বলে।

ক্রিয়া পদসমূহের শ্রেণীবিভাগ:

  • সমাপিকা ক্রিয়া: যে ক্রিয়া সম্পূর্ণ অর্থ প্রকাশ করে তাকে সমাপিকা ক্রিয়া বলে।
  • অসমাপিকা ক্রিয়া: যে ক্রিয়া সম্পূর্ণ অর্থ প্রকাশ করে না তাকে অসমাপিকা ক্রিয়া বলে।

উপসর্গ ও প্রত্যয় পদসমূহের শ্রেণীবিভাগ:

  • উপসর্গ: শব্দের আগে যোগ হয়ে নতুন শব্দ গঠনকারী পদকে উপসর্গ বলে।
  • প্রত্যয়: শব্দের শেষে যোগ হয়ে নতুন শব্দ গঠনকারী পদকে প্রত্যয় বলে।

অন্যান্য পদসমূহের শ্রেণীবিভাগ:

  • সর্বনাম পদ: বিশেষ্য পদের পরিবর্তে বসে এমন পদকে সর্বনাম পদ বলে।
  • বিশেষণ পদ: বিশেষ্য বা বিশেষণ পদকে বিশেষিত করে এমন পদকে বিশেষণ পদ বলে।
  • ক্রিয়াবিশেষণ পদ: ক্রিয়া পদকে বিশেষিত করে এমন পদকে ক্রিয়াবিশেষণ পদ বলে।
  • অব্যয় পদ: বাক্যের অর্থ বা বিন্যাস পরিবর্তন করে এমন পদকে অব্যয় পদ বলে।
  • সম্বন্ধ পদ: দুটি বাক্যের মধ্যে সম্পর্ক প্রকাশ করে এমন পদকে সম্বন্ধ পদ বলে।
  • সংযোজক পদ: দুটি বাক্যের মধ্যে সংযোগ ঘটায় এমন পদকে সংযোজক পদ বলে।
  • আবেগসূচক পদ: মানুষের আবেগ বা অনুভূতি প্রকাশ করে এমন পদকে আবেগসূচক পদ বলে।

এটিও পড়ে দেখতে পারেন: অব্যয় পদ কাকে বলে ও কত প্রকার?

উপসংহার

পদসমূহকে তাদের অর্থ, কাজ, গঠন প্রভৃতি বিবেচনায় বিভিন্ন শ্রেণীতে ভাগ করা হয়। এই শ্রেণীবিভাগগুলি বাক্যের অর্থ প্রকাশে সহায়ক হয়।

Leave a Comment